Blog

উপস্থাপন ও উপস্থাপক

আগেও যে কোনও অনুষ্ঠানের পরিচালককে বলা হত ঘোষক। এখন নাম পাল্টে হয়েছে সঞ্চালক, কখনওবা সুন্দর করে বলা হয় উপস্থাপক/উপস্থাপিকা। যে কোনও অনুষ্ঠানেই, সে ছোট হোক আর বড় হোক উপস্থাপকএক বা একাধিক থাকেন। কবিতা পাঠের আসর হোক বা বারো মিশেলি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হোক বা কোনো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হোক বা কোনো আড্ডার অনুষ্ঠান হোক উপস্থাপক একজন থাকেনই। 

 উপস্থাপকের কি কি গুণ থাকা দরকার। যেটা প্রথম দরকার  তা হোলো ভালো কণ্ঠস্বর, স্পষ্ট উচ্চারণ।তারপর চাই প্রচুর পড়াশোনা, সমসাময়িক বিভিন্ন শিল্পীদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য, প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ের পরিবর্তন ধারার স্পষ্ট জ্ঞান। কারণ একজন ভালো উপস্থাপককে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করতে হবে, তাই তাকে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দখল থাকা দরকার। আজ রবীন্দ্রজয়ন্তী, কাল হয়তো বইমেলা, আজ হয়তো স্মরণ অনুষ্ঠান কাল হয়তো পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, এছাড়াও আরও বহু বিষয়ের অনুষ্ঠান তো আছেই। উপস্থাপককে শুধুমাত্র নাম ঘোষণা করলেই চলে না। যে শিল্পী গান, আবৃত্তি, নৃত্য বা নাটক পরিবেশন করবেন তাঁর শিল্প জগতের অবস্থান সম্পর্কেও জানতে হবে। সেই জানার ভাণ্ডার থেকেই শ্রোতা বা দর্শকের কাছে তথ্যের পরে তথ্য তুলে ধরবেন। তবে এটাও মাথায় রাখতে হবে এই তথ্য পরিবেশন অবশ্যই হবে সংক্ষিপ্ত। লক্ষ্য রাখতে হবে তথ্যের ভারে দর্শক বা শ্রোতা যেন ক্লান্ত না হয়ে পড়ে। এক শিল্পীর অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে আর এর শিল্পী মঞ্চে উঠার মধ্যে একটা বেশ বড় সময়ই পাওয়া যায়। এই সময়টাকে সুন্দরভাবে কাজে লাগাবেন একজন উপস্থাপক।  মিষ্টি কণ্ঠে কথা বলবেন। প্রয়োজনে ছোট ছোট স্বাস্থ্যকর হাস্যরসাত্মক গল্প বলবেন। বলবেন—ছড়া কবিতার নির্বাচিত অংশ। এভাবেই দর্শক বা শ্রোতা মুগ্ধ হয়ে উপস্থাপককেও গ্রহণ করবে। ক্লান্ত হবে না। উপস্থাপনা কোনও অভিনয় নয়, বক্তৃতা নয়, সহজ ও সুন্দরভাবে সংযত কণ্ঠে নির্দিষ্ট বিষয়ের পরিবেশন মাত্র। উপস্থাপক এমনভাবে কথা বলবেন যাতে সামনের সারি থেকে একেবারে পিছনের সারির শেষ দর্শক ও শ্রোতা সমানভাবে শুনতে পায়। কোনো বাক্য বলার সময় অর্থের জন্য যে যে জায়গায় থামি সেই সেই জায়গাগুলিতে একটু টেনে বললে মনে হয় শ্রুতি মধুরতা বাড়ে, সবাই সমানভাবে শুনতে ও বুঝতে পারে।